গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা: কী খাবেন আর কী বাদ দিবেন


মা হওয়া একটি মেয়ের জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দের বিষয়। গর্ভে শিশুর আগমনের খবর পাওয়ার সাথে সাথেই সতর্ক হয়ে প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলতে হয়। গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের পুষ্টির চাহিদা সাধারণ সময়ের চেয়ে অনেক বেশি হয়।

তাই মায়ের সঠিকভাবে খাদ্য গ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা একজন চিকিৎসক ভালভাবে দিতে পারবেন। তবে, এই সময়ে সাধারণত পুষ্টিকর আহার গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এই তালিকায় ফল, শাক-সবজি, ভাত, রুটি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, পানি, বাদাম ইত্যাদি থাকে। এগুলো গর্ভবতী মায়ের বডিকে সুস্থ রাখতে এবং শিশুর বৃদ্ধি ও সুগঠনের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।

মনে রাখবেন, হোল গ্রেইন খাদ্য এই গুচ্ছে স্থান পেতে হবে। শিশুর বৃদ্ধিতে এই পুষ্টিগুন খুব দরকারি। এই পোস্টে বিস্তারিত তালিকা দেওয়া হলো।

গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
প্রসূতি মেয়ের পুষ্টিকর খাবার বারবার খেতে হয়। গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ছবি: মাতিলদা ওর্মউড



গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা: শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য

আমরা এখানে সাধারণত অনুসরণীয় একটি আহার তালিকা সংগ্রহ করে দিচ্ছি। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে ফুলে যাওয়া, বমি বমি ভাব এবং মেজাজের পরিবর্তনের মতো শারীরিক লক্ষণ অনুভব এ সময় হয়। একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য চার্ট আপনাকে এই পরিবর্তন আরও ভালভাবে মোকাবেলা করতে সাহায্য করবে।

একজন প্রেগন্যান্ট মায়ের প্রতিদিনের ফুডলিস্টে নিম্নলিখিত খাদ্যসমূহ অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে আমরা মনে করি , তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এ লিস্ট প্রস্তুত করবেন। কারণ বয়স, ওজন ও উচ্চতা ভেদে এবং নারীর দেহের গঠন ও পুষ্টি চাহিদা বিবেচনায় গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা কিছুুটা পরিবর্তন হতে পারে।

  • ফল এবং শাকসবজি: এসবে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল এবং ফাইবার থাকে। এগুলো গর্ভবতী মায়ের দেহকে সুস্থ রাখতে এবং শিশুর বেড়ে ওঠা ও বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
  • হোল গ্রেইন শস্য: Whole grains মানে পূর্ণ শস্য। এতে অনেক পরিমাণে ফাইবার, নিউট্রিয়েন্ট এবং খনিজ থাকে। এসব খাদ্য প্রেগন্যান্ট নারীর শরীরকে শক্তি দেয় এবং কষা দূর করতে সাহায্য করে।
  • প্রোটিন: প্রোটিন আমাদের দেহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। এটি অন্তঃসত্ত্বা মায়ের গাত্র এবং শিশুর বড় হওয়া ও বিকাশের জন্য প্রয়োজন। প্রোটিন যুক্ত খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, দুধ এবং দুগ্ধজাত খাদ্য।
  • দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য: এতে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি থাকে। এগুলো প্রেগন্যান্ট নারীর হাড় এবং দাঁতকে শক্তিশালী করে এবং শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
  • মাছ: মাছতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শিশুর মাথা এবং চোখের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়। মাছতে প্রোটিনও থাকে যা গর্ভবতী মায়ের দেহ এবং শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য প্রয়োজন।
  • পেস্তা বাদাম এবং বীজ: বাদাম এবং বীজসমূহে ফাইবার, প্রোটিন, নিউট্রিয়েন্ট এবং খনিজ থাকে। এগুলো প্রেগন্যান্ট নারীর দেহকে শক্তি দেয় এবং কনস্টিপেশন দূর করতে সাহায্য করে।
  • পানি: পানি অন্তঃসত্ত্বা মায়ের এবং শিশুর জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। পানি দেহকে হাইড্রেটেড রাখে এবং শিশুর দৈহিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়। প্রেগন্যান্ট নারীর প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত।


গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকা

গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাদ্য তালিকা এখানে দেওয়া হল:

সকালের নাস্তা:
ওটমিল
টোস্ট
কমলা ও অন্যান্য ফল
গ্র্যানোলা
ডিম

দুপুরের খাবার:
টমেটো, শসা’র সালাদ
স্যুপ
বার্গার
মিষ্টি আলু
পাস্তা
ফ্রাইড রাইস
ভাত

বিকালের নাস্তা:
ড্রাগন ফল ও অন্যান্য ফল
বাদাম ভাজা
ডেজার্ট
স্ন্যাকস

রাতের খাবার:
মাছ
ডিম
শাকসবজি
ফল
বাদাম
লেবু


মনে রাখবেন, গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা অবশ্যই নিম্নলিখিত খাদ্যসমূহ রাখবে:

কামরাঙা ও পাকা ফল: ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার থাকে যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়।

নিউট্রিয়েন্ট, খনিজ: এতেও অনেক পরিমাণে নিউট্রিয়েন্ট, খনিজ এবং ফাইবার থাকে। গর্ভবতী প্রসূতির প্রতিদিন না হলেও মাঝে মাঝে কচু ও অন্য শাকসবজি খাওয়া উচিত।


৭৫গ্রাম প্রোটিন: প্রোটিন মা এবং শিশুর কোষের বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়। প্রেগন্যান্ট নারীর প্রতিদিন কমপক্ষে ৭৫ গ্রাম প্রোটিন খাওয়া উচিত।

চর্বি জাতীয় খাদ্য: এসব খাদ্যে বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি থাকে যা মা এবং শিশুর হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের প্রতিদিন এসব পণ্য গ্রহণ করা উচিত।

মুরগির ডিম: ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ফলিক অ্যাসিড থাকে যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। প্রেগন্যান্ট নারীর প্রতিদিন এক বা দুটি মুরগি, হাঁস, ইত্যাদির ডিম খাওয়া উচিত। তাহলে তিনি সুস্থ শিশু জন্ম দিতে পারবেন।

মলা মাছ ও অন্য মৎস্য: মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা মা এবং শিশুর ব্রেইনের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। গর্ভবতী মায়েদের প্রতি সপ্তাহে দুই বা তিনবার মাছ খাওয়া উচিত। মাছ মাথা ঠাণ্ডা রাখে।

কাজু বাদাম: এসব বাদাম এবং অন্য বীজে অনেক পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টি থাকে যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। প্রেগন্যান্ট নারীরা প্রতিদিন অন্তত ১০০ গ্রাম কাজু বা অন্য বীজ খেতে পারেন।

আট গ্লাস পানি: অন্তঃসত্ত্বা প্রসূতির পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা অপরিহার্য। প্রেগন্যান্ট নারীর প্রতিদিন কমপক্ষে আট গ্লাস পানি পান করা উচিত।

কী কী ফল খাবেন: গর্ভবতী মায়ের ফল খাবার তালিকা

প্রেগন্যান্ট নারীর জন্য ফল খাওয়া খুবই উপকারী। ফলে প্রচুর পরিমাণে নিউট্রিয়েন্ট, খনিজ, ফাইবার এবং দেহ তাজা রাখার উপাদান থাকে যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়

গর্ভবতী মায়েদের জন্য কিছু উপকারী ফল এর নাম দেখুন:

কলা: কলাতে বেশি পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা মায়ের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কলাতে ফাইবারও থাকে যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।

আপেল: আপেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আপেলে ফাইবারও থাকে যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

কমলা: কমলায় অনেক পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কমলাতে ফাইবারও থাকে যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।

তরমুজ: তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে যা মায়ের হাইড্রেশন বজায় রাখতে সাহায্য করে। তরমুজে ভিটামিন এ এবং সিও থাকে যা মা এবং শিশুর দৃষ্টিশক্তির জন্য প্রয়োজনীয়।

ব্লুবেরি: ব্লুবেরিতে বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা মা এবং শিশুর কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

আঙুর: আঙুরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আঙুরে ফাইবারও থাকে যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।

আনারস: আনারসে অনেক পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আনারসে ব্রোমেলাইনও থাকে যা মায়ের জয়েন্টের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

পেঁপে: পেঁপেতে বেশি পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে যা মা এবং শিশুর দৃষ্টিশক্তির জন্য ভাল। পেঁপেতে লাইকোপেনও থাকে যা মা এবং শিশুর ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

আম: আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আমতে ফাইবারও থাকে যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।

নারকেল: নারকেলে অনেক পরিমাণে পানি থাকে যা মায়ের হাইড্রেশন বজায় রাখতে সাহায্য করে। নারকেলে তেলও থাকে যা মায়ের ত্বক এবং চুলের জন্য ভাল।


ফল খাওয়ার সময় প্রেগন্যান্ট নারীর কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে:
  1. ফলগুলো অবশ্যই ধুয়ে খেতে হবে।
  2. ফলসমূহ বেশি পরিমাণে খেতে হবে না।
  3. ফলগুলো যেন পচা বা নষ্ট না হয়।
  4. ফলমূল যেন অতিরিক্ত মিষ্টি না হয়।


গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা: মাস অনুসারে (০১-১০)

এখানে মাসভিত্তিক খাবারের তালিকা দেওয়া হচ্ছে। বেশিরভাগ খাবারই এখানে মিলে যেতে পারে বিভিন্ন মাসের তালিকায়। সে জন্য আপনার যে মাসের তালিকা প্রয়োজন শুধু সে মাসের তালিকা দেখুন। তাতে আপনার সব মাসের খাবার তালিকা পড়তে হবে না। সময় বাঁচবে, বিরক্তি লাগবে না। 

১ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকা গর্ভধারণের সময়কাল অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। গর্ভধারণের প্রথম মাসটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়, কারণ এই সময়কালে ভ্রূণটি তার বিকাশ শুরু করে। প্রেগন্যান্ট নারীর এই সময়ে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্তঃসত্ত্বা মায়ের প্রথম মাসের ফুড লিস্টে যেসব খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করা উচিত সেগুলো হল:

মাল্টা ও অন্য ফল: ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার থাকে যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। প্রেগন্যান্ট নারীর প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচটি পদের ফল খাওয়া উচিত।

ব্রকলি ও অন্যান্য সবজি: এতে অনেক পরিমাণে নিউট্রিয়েন্ট, খনিজ এবং ফাইবার থাকে। গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিন বিভিন্ন রকমের শাকসবজি খাওয়া উচিত।

ফাইবার যুক্ত খাদ্য: এই খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। এতে প্রোটিন এবং আয়রনও থাকে যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়।


দুধ-দই: দুগ্ধজাত খাদ্যে বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি থাকে যা মা এবং শিশুর হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়।  অ্যাসপারাগাস খেতে পারেন ক্যালসিয়াম এর জন্য।

কোয়েল এর ডিম: ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ফলিক অ্যাসিড থাকে যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। অন্তঃসত্ত্বা প্রসূতির প্রতিদিন এক বা দুটি ডিম খাওয়া উচিত।

শিং মাছ: মাছের থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যা মা এবং শিশুর ব্রেইন স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। প্রেগন্যান্ট নারীর প্রতি সপ্তাহে দুই বা তিনবার মাছ খাওয়া উচিত।

কুমরো বীজ: বীজে অনেক পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টি থাকে যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। গর্ভবতী মায়েরা প্রতিদিন অন্তত এক মুঠো বাদাম বা বীজ খেতে পারেন।

জল: অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা খুবই অপরিহার্য। গর্ভবতী প্রসূতির প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ গ্লাস জল পান করা উচিত।


২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা  

গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকা গর্ভধারণের সময়কাল অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। গর্ভধারণের দ্বিতীয় মাসটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়, কারণ এই সময়কালে ভ্রূণটি তার বিকাশ অব্যাহত রাখে এবং তার অঙ্গ এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গঠন শুরু করে। অন্তঃসত্ত্বা মায়ের এই সময়ে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া খুবই অনুসরণীয়। গর্ভবতী মায়ের দ্বিতীয় মাসের আহারগুচ্ছে যেসব আহার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত সেগুলো হল:

কাঁঠাল ও অন্য ফল: ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার থাকে যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিন কিছু ফল খাওয়া উচিত।

সিম ও সবুজ লতা-পাতা: এসবে বেশি পরিমাণে নিউট্রিয়েন্ট, খনিজ এবং আঁশ থাকে। অন্তঃসত্ত্বা প্রসূতির প্রতিদিন  পালং শাক, কলমি শাক ইত্যাদি খাওয়া উচিত।

স্যুপ: শস্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। এসবে প্রোটিন এবং আয়রনও থাকে যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। এসব দিয়ে স্যুপ তৈরি করা যায়।

প্রতিদিন প্রোটিন: প্রোটিন মা এবং শিশুর কোষের বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়। গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিন সবচেয়ে কম হলেও ৭৫ গ্রাম প্রোটিন খাওয়া উচিত।

দই: দুগ্ধজাত খাবারে অনেক পরিমাণে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি থাকে যা মা এবং শিশুর হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। 

পাখির ডিম: ডিমে অনেক পরিমাণে প্রোটিন এবং ফলিক অ্যাসিড থাকে যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। গর্ভবতী প্রসূতির প্রতিদিন এক বা দুটি ডিম খাওয়া উচিত।

ইলিশ মাছ: মাছের ভেতর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা মা এবং শিশুর মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের প্রতি সপ্তাহে দুই বা তিনবার ইলিশ বা অন্য মাছ খাওয়া উচিত।

চিনা বাদাম এবং বীজ: বাদাম এবং বীজে অনেক পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টি থাকে যা মা এবং বাবুটির স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। গর্ভবতী মায়েরা প্রতিদিন মুঠো মুঠো বাদাম বা বীজ খেতে পারেন।

ড্রিংকিং ওয়াটার: গর্ভবতী মায়েদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ড্রিংকিং ওয়াটার পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্তঃসত্ত্বা প্রসূতির প্রতিদিন কমসে কম আট গ্লাস পানি পান করা উচিত।


৩ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকা গর্ভধারণের সময়কাল অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। গর্ভধারণের তৃতীয় মাসটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়, কারণ এই সময়কালে ভ্রূণটি তার বিকাশ অব্যাহত রাখে এবং তার অঙ্গ এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গসমূহ পূর্ণতা লাভ করে। প্রেগন্যান্ট নারীর এই সময়ে পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। অন্তঃসত্ত্বা মায়ের তৃতীয় মাসের খাদ্য লিস্টে যেসব খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত সেগুলো হল:


ভিটামিন: ফলমূলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার থাকে যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিন অন্তত পাঁচ পদ ফল খাওয়া উচিত।

ফুলকপি: এগুলোয় বেশি পরিমাণে নিউট্রিয়েন্ট, খনিজ এবং আঁশ থাকে। প্রেগন্যান্ট নারীর প্রতিদিন কমপক্ষে কিছু শাক সবজি খাওয়া উচিত। লাল গোলাপ খেতে পারেন।

হোল গ্রেইন গম: এ খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজম সহায়ক, স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। এই আহারে প্রোটিন এবং আয়রনও থাকে যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়।

মাংস: এগুলো মা এবং সন্তানের কোষের বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়। গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিন অন্তত ৭৫ গ্রাম প্রোটিন খাওয়া উচিত।

পনির: এসব পণ্যে অনেক পরিমাণে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি থাকে যা মা এবং শিশুর হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। দুধ খেতে পারেন।

হাঁসের ডিম: ডিম বেশি পরিমাণে প্রোটিন এবং ফলিক অ্যাসিড যুক্ত যা মা এবং ছোট্ট মানুষটির স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের প্রতিদিন এক বা দুটি ডিম খাওয়া উচিত।

রুই মাছ: মাছের গুন হলো এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা মা এবং শিশুর ব্রেইন স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। গর্ভবতী প্রসূতির প্রতি সপ্তাহে দুই বা তিনবার রুই ও অন্য মাছ খাওয়া উচিত।

তিল বীজ: বীজে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টি থাকে যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। প্রেগন্যান্ট নারীরা প্রতিদিন অন্তত এক মুঠো তিল বীজ খেতে পারেন।

পানি: অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পানীয় জল পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রেগন্যান্ট নারীর প্রতিদিন নিদেনপক্ষে আট গ্লাস পানি পান করা উচিত।


৪ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

একজন ৪ মাসের প্রেগন্যান্ট নারী যে তালিকা অনুসরণ করে খেতে পারেন:

ডাল, সয়াবিনপ্রেগন্যান্ট নারীর জন্য প্রোটিন বেশ দরকারি। প্রোটিন থেকে শিশুর কোষ এবং টিস্যু গঠিত হয়। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, সয়াবিন, বাদাম এবং বীজ।

ক্যালসিয়াম: ক্যালসিয়াম থেকে শিশুর হাড় এবং দাঁত গঠিত হয়। ক্যালসিয়াম যুক্ত আহারসমূহের মাঝে রয়েছে দুধ, দই, পনির, ব্রকোলি, পালং শাক, সারগাম, সয়া দুধ এবং সয়া পনির।

আয়রন: আয়রন থেকে শিশুর রক্ত তৈরি হয়। আয়রন সমৃদ্ধ খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে লাল মাংস, মাছ, ডিম, পেস্তা বাদাম, বীজ, সবুজ শাকসবজি এবং শুকনো ফল।

ফলিক অ্যাসিড: ফলিক অ্যাসিড থেকে শিশুর মাথা এবং মেরুদণ্ডের বিকাশ হয়। ফলিক অ্যাসিড গুনসহ খাদ্য এর তালিকায় রয়েছে সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, টোফু, কাঠ বাদাম এবং বীজ।

ভিটামিন সি: ভিটামিন সি থেকে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন সি ওয়ালা খাবারগুলোর মাঝে রয়েছে কমলা, লেবু, মাল্টা, ব্রকোলি, টমেটো, ক্যাপসিকাম এবং পেঁপে।

ফাইবার, ভাত: ফাইবার থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ হয়। ফাইবার সহকারে আহারসমূহের উৎসে রয়েছে ফলমূল, সবুজ শাকসবজি, ওটস, চিনা বাদাম এবং বীজ।

এছাড়াও, অন্তঃসত্ত্বার বেশি পরিমাণে পানি পান করা উচিত। পানি থেকে শিশুর শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ হয় এবং শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ স্বাভাবিকভাবে হয়।


৫ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

৫ মাসের প্রেগন্যান্ট নারীর জন্য একটি সুষম খাদ্য তালিকা নিম্নরূপ:

প্রোটিন: প্রোটিন থেকে মা এবং শিশুর কোষ এবং টিস্যু গঠিত হয়। প্রোটিন যুক্ত আহারগুচ্ছে রয়েছে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, সয়াবিন, বাদাম এবং বীজ।

ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার: ক্যালসিয়াম থেকে মা এবং শিশুর হাড় এবং দাঁত গঠিত হয়। ক্যালসিয়াম এর খাবারসমূহের মেনুতে রয়েছে দুধ, দই, পনির, ব্রকোলি, পালং শাক, সারগাম, সয়া দুধ এবং সয়া পনির।

শুকনো ফল: আয়রন থেকে মা এবং বেবির রক্ত তৈরি হয়। আয়রন সমৃদ্ধ খাদ্য এর মাঝে রয়েছে লাল মাংস, মাছ, ডিম, কাঠ বাদাম, বীজ, সবুজ শাকসবজি এবং শুকনো ফল।

টোফু: ফলিক অ্যাসিড থেকে মা এবং শিশুর ব্রেইন এবং মেরুদণ্ডের বিকাশ হয়। ফলিক অ্যাসিড যুক্ত খাবার এর মাঝে রয়েছে সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, টোফু, বাদাম এবং বীজ।

টমেটো: ভিটামিন সি থেকে মা এবং বেবির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন সি ফুডসমূহে রয়েছে কমলা, লেবু, মাল্টা, ব্রকোলি, টমেটো, ক্যাপসিকাম এবং পেঁপে।

আঁশ: ফাইবার থেকে কনস্টিপেশন রোধ হয়। ফাইবার যুক্ত খাদ্য তালিকায় রয়েছে ফলমূল, সবুজ শাকসবজি, ওটস, বাদাম এবং বীজ।


৬ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

এখানে ৬ মাসের প্রেগন্যান্ট নারীর জন্য একটি খাদ্য নির্ঘন্ট দেওয়া হল:

ব্রেকফাস্ট
দুধ দিয়ে তৈরি ওটমিল
ফল এবং বাদাম দিয়ে টোস্ট
গ্রিলড স্যান্ডউইচ
ডিমের অমলেট
ফলের সালাদ

দুপুরের খাবার
ভাত এবং ডাল
স্যুপ
সবজি সালাদ
টাকো
ফ্রাইড রাইস

রাতের খাবার
মাছ এবং সবজি
মাংস এবং সবজি
চিংড়ি এবং সবজি
নুডলস এবং সবজি
টার্কি বার্গার

স্ন্যাকস
ফল
কাঠ বাদাম
বীজ
দই
চিপস
স্যান্ডউইচ

তরল
পানি
ফলের রস
দুধ
চা
কফি

৭ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

একটি খাদ্য নির্ঘন্ট এখানে দেওয়া হল ৭ মাসের প্রেগন্যান্ট নারীর জন্য:

খাবারের ধরন

খাবার



সকালের নাস্তা

ওটমিল

দুধের সাথে তৈরি রুটি
ডিম
ফল
বাদাম
বীজ


দুপুরের খাবার


সালাদ

স্যুপ
ভাত এবং ডাল
মাছ
মাংস


স্ন্যাকস

ফল

লাড্ডু

বাদাম
বীজ
দই
চিপস
স্যান্ডউইচ

 

রাতের খাবার


মুলা ও অন্য সবজি দিয়ে ভাত

সবজি দিয়ে মাছ
সবজি দিয়ে মাংস
সবজি দিয়ে টোফু
সবজি দিয়ে স্যুপ

 

তরল


পানি

ডাবের পানি

ফলের রস
দুধ
চা
কফি


৮ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

অন্তঃসত্ত্বা মায়ের জন্য একটি খাদ্য নির্ঘন্ট এখানে দেওয়া হল-যিনি ৮ মাসের গর্ভ নিয়ে আছেন:

ব্রেকফাস্ট
দুধের সাথে তৈরি ওটমিল
ফল
চিনা বাদাম
বীজ
ডিম
দই
রুটি-পায়েস

দুপুরের খাবার
সবজি দিয়ে ভাত
সবজি দিয়ে মাছ
সবজি দিয়ে মাংস
সবজি দিয়ে স্যুপ
সালাদ

রাতের খাবার
সবজি দিয়ে টোফু
সবজি দিয়ে টার্কি
সবজি দিয়ে চিকেন
সবজি দিয়ে সস দিয়ে মাছ
সবজি দিয়ে সস দিয়ে মাংস

স্ন্যাকস
ফল
কাজু বাদাম
বীজ
দই
চিপস
স্যান্ডউইচ

তরল
ফলের রস
দুধ
চা
কফি

৯ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

নিম্নরূপ সুষম খাদ্য নির্ঘন্ট ৯ মাসের প্রেগন্যান্ট নারীর জন্য:

ব্রেকফাস্ট
দুধের সাথে তৈরি ওটমিল
ফল এবং বাদাম দিয়ে টোস্ট
গ্রিলড স্যান্ডউইচ
ডিমের অমলেট
ফলের সালাদ

দুপুরের খাবার
পোলাও বা ভাত এবং ডাল
স্যুপ
শাক-সবজি’র সালাদ
টাকো
ফ্রাইড রাইস

রাতের খাবার
মাছ এবং সবজি
মাংস এবং সবজি
চিংড়ি এবং সবজি
নুডলস এবং সবজি
টার্কি বার্গার

স্ন্যাকস
আম, জাম, পেয়ারা বা অন্য ফল
বাদাম
বীজ
দই
চিপস
স্যান্ডউইচ

তরল
পানি
ফলের রস
দুধ
চা
কফি

১০ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

গর্ভবতী মায়েদের জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ১০ মাসের প্রেগন্যান্ট নারীর জন্য, তাদের খাদ্যতালিকায় এমন খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যা তাদের এবং তাদের শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।


এবার ১০ মাসের গর্ভবতী মায়েদের জন্য একটি খাদ্যসূচি দেওয়া হল:


মাংস: প্রোটিন বেবির বিকাশ এবং বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। অন্তঃসত্ত্বার প্রতিদিন প্রায় ৭৫ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত। প্রোটিন যুক্ত খাদ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে মাংস, মাছ, ডিম, দুগ্ধজাত পণ্য, ডাল, শিম এবং কাঠ বাদাম।

সয়া দুধ: ক্যালসিয়াম শিশুর হাড় এবং দাঁতের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়। প্রেগন্যান্ট নারীর প্রতিদিন প্রায় ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা উচিত। ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার হিসেবে রয়েছে দুধ, দই, পনির, ব্রকোলি, ক্যালসিয়াম যুক্ত সয়া দুধ এবং সয়া পনির।

ডালিম: আয়রন রক্ত ​​উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয়। প্রেগন্যান্ট নারীর প্রতিদিন প্রায় ২৭ মিলিগ্রাম আয়রন গ্রহণ করা উচিত। আয়রন যুক্ত আহার লাল মাংস, মাছ, ডিম, বাদাম, ডালিম এবং শাকসবজি।

ফলের রস: ফলিক অ্যাসিড গর্ভপাত এবং নবজাতকের জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি হ্রাস করতে সাহায্য করে। প্রেগন্যান্ট নারীর প্রতিদিন প্রায় ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ করা উচিত। ফলিক অ্যাসিড যুক্ত খাদ্য যেমন- সবুজ শাকসবজি, লেবুর রস, ব্রেড, সিরিয়াল এবং ফলের রস।

স্ট্রবেরি: ভিটামিন সি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনে সাহায্য করে। গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিন প্রায় ৮৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করা উচিত। ভিটামিন সি উৎসের খাবারে আছে- লেবু, কমলা, ব্রকলি, টমেটো, স্ট্রবেরি এবং ক্যাপসিকাম।

ভিটামিন ডি: ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। প্রেগন্যান্ট নারীর প্রতিদিন প্রায় ১৫ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ডি গ্রহণ করা উচিত। ভিটামিন ডি যুক্ত ফুড: মাছ, ডিম, দুধ, দই এবং নরম সূর্যালোক।

অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের অবশ্যই তাদের ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য নির্ঘন্ট তৈরি করা উচিত

গর্ভবতী মায়ের কোন খাবার খাওয়া যাবে না

গর্ভবতী মায়েদের কিছু খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এসবে আছে:

  • কাঁচা মাংস: কাঁচা মাংসে জীবাণু থাকতে পারে যা অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের এবং শিশুর অসুস্থতা করতে পারে।
  • কাঁচা ডিম: কাঁচা ডিমেও জীবাণু থাকতে পারে যা প্রেগন্যান্ট নারীর এবং বেবির অবস্থা খারাপ করতে পারে।
  • অ্যালকোহল: অ্যালকোহল গর্ভবতী প্রসূতির এবং শিশুর জন্য ক্ষতিকারক। এটি বেবির জন্মগত ত্রুটি সৃষ্টি করতে পারে।
  • ধুমপান: তামাক প্রেগন্যান্ট নারীর এবং শিশুর জন্য ক্ষতিকারক। এটি গর্ভস্থের জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে এবং শিশুর ওজন কম হতে পারে।
  • ক্যাফিন: ক্যাফিন গর্ভবতী মায়েদের এবং বেবির জন্য ক্ষতিকারক। এটি শিশুর ওজন কম হতে পারে এবং বেবির জন্মগত ত্রুটি সৃষ্টি করতে পারে।


খাদ্য তালিকা তৈরি করার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে

র্ভবতী মায়েদের খাদ্য তালিকা তৈরির সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে: 

পুষ্টিকর খাবার বেছে নিন: প্রেগন্যান্ট নারীর খাদ্য সারণিতে অবশ্যই পুষ্টিকর খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

পরিমিত পরিমাণে আহার খান: অন্তঃসত্ত্বা প্রসূতির অতিরিক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয়। 

নিয়মিত খাদ্য খান: প্রেগন্যান্ট মায়েদের দিনে ছয়বার তো খাদ্য খেতেই হয়। 

স্বাস্থ্যকর খাবার খান: গর্ভবতী মায়েদের অবশ্যই স্বাস্থ্যকর ফুড খেতে হবে। 

ডাক্তারের সাথে পরামর্শ: অন্তঃসত্ত্বা প্রসূতির খাদ্য নির্ঘন্ট তৈরিতে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা ভাল।


গর্ভবতী মায়েদের খাদ্য গ্রহণে যা বিবেচনা করা উচিত

খাদ্য তালিকা তৈরিতে, গর্ভবতী মায়েদের অবশ্যই নিম্নলিখিত কিছু বিষয় বিবেচনা করা উচিত:

  • পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা
  • ওজন বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা, সুখে থাকা
  • খাবারের স্বাদ ও গন্ধের পরিবর্তনসমূহ মোকাবেলা করা
  • অসুস্থতা প্রতিরোধ করা
  • শিশুর বিকাশের জন্য সবচেয়ে ভাল পরিবেশ তৈরি করা


আমরা জানলাম, গর্ভবতী মায়েদের সঠিকভাবে খাওয়া অবশ্য পালনীয়। এটি প্রেগন্যান্ট নারীর এবং শিশুটির স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি। হোল গ্রেইন বা পূর্ণ গুন খাদ্য শস্য খেতে হবে। মাছ মাংস, ভাত-রুটির সাথে ডিম দুধ, সবজি, ফল, শাক, বাদাম, খাওয়া এসময়টাতে বেশ দরকারি। আমরা আলোচনা করেছি যে কী কী খাওয়া যাবে এই সময়ে; আর কী খাওয়া যাবে না। পাশাপাশি কোন কোন বিষয় খেয়াল রাখতে হবে প্রসূতির খাদ্য প্রস্তুত করার সময়।

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form