জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই: জন্ম নিবন্ধন দেখার প্রক্রিয়া


জন্ম নিবন্ধন থাকলে একজন ব্যক্তি অনেক নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পেতে পারে। শোনা যাচ্ছে যে ভবিষ্যতে পাসপোর্ট এবং জাতীয় পরিচয়পত্র জন্মবিন্ধন হলে নিজে নিজেই হয়ে যাবে। জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার প্রয়োজন হয় কি কখনো?

হ্যাঁ, জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই কীভাবে করতে হয় তা জানা প্রয়োজন হতে পারে। এজন্য, আপনাকে আপনার এলাকার নিকটস্থ জন্ম নিবন্ধন অফিসে গিয়ে বলতে হবে যে-আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন আছে কিনা তা যাচােই করতে চান। অনলাইনেও আপনি জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন-ঘরে বসেই।

এই পোস্টে জন্ম নিবন্ধন কীভাবে যাচাই করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হচ্ছে।


জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই
জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই। ছবি: স্কাইলার ক্যাং


জন্ম নিবন্ধন যাচাইকরণের প্রক্রিয়া: জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই

সরকারের ডিজিটাল বান্ধব হবার জন্য জন্ম নিবন্ধন যাচাই করা এখন বেশ সহজ। আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন নম্বর এবং জন্ম তারিখ দিয়ে অনলাইনে বা অফলাইনে উভয় উপায়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারছেন।

জন্ম নিবন্ধন একটি নাগরিক প্রক্রিয়া; এর সনদ একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি যা একজন বাংলাদেশি তার নাগরিক জন্ম পরিচয় প্রকাশের জন্য ব্যবহার করে। বাংলাদেশে এটি একটি আইনি দলিল যা একজন নাগরিকের জন্ম তারিখ, নাম, পিতা-মাতার নাম, জন্মস্থান এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ধরে রাখে।

নাগরিক সুযোগ সবিধাগুলো সহজে পেতে জন্ম নিবন্ধন থাকতে হয়।

জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, শিশু অধিকার সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে জন্ম নিবন্ধন আইন করা হয়েছে। গত ৩ জুলাই ২০০৬ থেকে আইনটি কার্যকর করা হয়েছে। বাংলাদেশে জন্ম গ্রহণকারী প্রত্যেকটি মানুষের জন্য জন্ম নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক।

জন্ম নিবন্ধন আইনে বলা হয়েছে, বয়স, জাতি-গোষ্ঠি, ধর্ম-কিংবা জাতীয়তা সকল বিষয় নির্বিশেষে এই জন্ম নিবন্ধন করতে হবে।


আরো পড়ুন: গাজীপুর সাফারি পার্ক ভ্রমণের টিকেটমূল্য কত?


অফলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই

অফলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে চাইলে, আপনাকে আপনার এলাকার নিকটস্থ জন্ম নিবন্ধন অফিসে যেতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা ওয়ার্ড কমিশনার অফিসে আপনার জন্ম নিবন্ধন নম্বর এবং জন্ম তারিখ প্রদান করুন। অফিস কর্মী আপনার জন্ম নিবন্ধন যাচাই করবে এবং আপনাকে একটি সফল যাচাইকরণের সনদ সরবরাহ করবে।

সরকার জানিয়েছে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনাকে আপনার জন্ম নিবন্ধনের সঠিকতা নিশ্চিত করতে এবং ভবিষ্যতে নানারকম ঝামেলা এড়াতে সাহায্য করবে।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই

এক্ষেত্রে প্রথমেই আমরা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন যাচাইয়ের চেষ্টার কথা বলব। কারণ এটি ঘরে বসে ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোনে বের করা সম্ভব। ২০১০ থেকে অনলাইনে জন্মসনদ দেওয়া শুরু হয়। অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে, আপনাকে জন্ম নিবন্ধন যাচাইকরণের সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে সঠিক তথ্য দিতে হবে। যেমন আপনার জন্ম নিবন্ধন নম্বর এবং জন্ম তারিখ প্রবেশ দিয়ে যাচাই করতে পারবেন। পরে বিস্তারিত প্রক্রিয়া দেখানো হবে।


আরো পড়ুন: আওয়ামী লীগ এর রাজনৈতিক স্লোগানগুলো


অনলাইন জন্ম নিবন্ধন যাচাই প্রক্রিয়া

যে প্রক্রিয়াটি জন্ম নিবন্ধন যাচাইকরণের-তা মোটেও জটিল নয়। আপনি নিচের পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করে আপনার বা পরিবারের কারো জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারেন:

১. জন্ম নিবন্ধন যাচাইকরণের ওয়েবসাইটে যান। ওয়েবসাইট ঠিকানা ওপরে দেওয়া হয়েছে। ২. নির্ধারিত ঘরে আপনার জন্ম নিবন্ধন নম্বর এবং জন্ম তারিখ প্রবেশ করান। ৩. জন্ম নিবন্ধন "যাচাই করুন" বোতামে ক্লিক করুন।

ওপরের তথ্য যদি ঠিক থাকে অর্থাৎ যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন সঠিকভাবে রেজিস্টার করা থাকে, তাহলে আপনি একটি সফল যাচাইকরণের ফলাফল পাবেন। আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধনের তথ্য সেখানে প্রদর্শিত হয়েছে দেখতে পাবেন।

জন্ম নিবন্ধন যাচাইকরণের ওয়েবসাইট

বাংলাদেশ সরকারের জন্ম নিবন্ধন যাচাইকরণের ওয়েবসাইটটি হল https://everify.bdris.gov.bd/। এই ওয়েবসাইটে প্রবেশের মাধ্যমে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন নম্বর এবং জন্ম তারিখ দিয়ে নিজের বা অন্যের জন্ম নিবন্ধন পরীক্ষা করতে পারেন।


আরো পড়ুন: কোন ব্র্যান্ডের এসির কত দাম?


জন্ম নিবন্ধন যাচাইকরণের তথ্য: যা আপনার সামনে প্রদর্শিত হবে

জন্ম নিবন্ধন যাচাইকরণের তথ্যগুলো হল:

  • জন্ম নিবন্ধন নম্বর
  • ব্যক্তির জন্ম তারিখ
  • নাম
  • বাবার নাম
  • মায়ের নাম
  • জন্মস্থান
  • জাতীয়তা
  • ধর্ম
  • পেশা (বড়দের জন্য)
  • ঠিকানা


অনলাইন বা অফলাইন জন্ম নিবন্ধন যাচাইকরণের সুবিধা

জন্ম নিবন্ধন যাচাইকরণের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম সুবিধা হলো- জন্ম তথ্য সরকারী বহিতে থাকা বা না থাকা সম্পর্কে অবগত হওয়া। জন্ম নিবন্ধন যাচাইকরণের সুবিধাগুলি হল:

  • নিজের বা পরিবারের সদস্যের জন্ম নিবন্ধন আদৌ রেজিস্টার তথ্য ভান্ডারে আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে পারেন।
  • আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধনের তথ্য সংশোধন করতে পারেন।
  • আপনার জন্ম নিবন্ধনের একটি কপি তৈরি করতে পারেন।
  • জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সরকারী সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন।


জন্ম নিবন্ধন যাচাইকরণের গুরুত্ব কতটুকু?

জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার নানাবিধ গুরুত্ব রয়েছে। তন্মধ্যে প্রধান বিষয় হল-আসলেই আপনার বা আপনার পরিবারের সদস্যের জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে কিনা সেটি নিশ্চিত হওয়া। ৬ অক্টোবর 'জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন' দিবস ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যান্য দিক সহ জন্ম নিবন্ধন যাচাইকরণের গুরুত্ব হল:

  • এই নিবন্ধন যাচাই আপনাকে আপনার জন্ম নিবন্ধনের সত্যতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
  • এই যাচাই আপনাকে ভবিষ্যতে যেকোনো সমস্যা এড়াতে হেল্প করবে।
  • এই প্রক্রিয়া আপনাকে গণ সুযোগ-সুবিধাগুলি পেতে সহায়তা করবে।



এতক্ষণ জন্ম নিবন্ধন হয়েছে কি না সেটি যাচাই করার উপায় আমরা আলোচনা করলাম। কেউ জন্মগ্রহণ করলে ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন করতে হবে। সঠিক বানানে নাম লেখা হয়েছে কি না সেটি নিশ্চিত হন। জন্ম নিবন্ধন থাকলে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবার ঝুঁকি থাকে না। 

শেখ হাসিনা সরকারের আমলেও  জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করে জন্ম স্থান, পিতার নাম, মাতার নাম ইত্যাদি ঠিক আছে কি না তাও দেখা হয়। কোন সমস্যা থাকলে সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form