এক সাংবাদিক গুনে দেখেছিলেন যে সচিবালয়ে এক ভবনেই ২৪০০ টনের এসি রয়েছে। এ থেকে বুঝা যায়-দেশে তীব্র গরম বেড়েছে। এতে বেড়েছে এসির কদর। গরম এলে বাজারে বাড়ে এসি বিক্রি। তীব্র দাবদাহে স্বস্তি পেতে অনেকে এসি কিনতে সঞ্চয় ভাঙ্গেন।
এসির দাম ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার হতে পারে। এর চেয়ে কম বেশিও হয়। বাজারে ডলারের সংকটের কারণে এসি’র দামের ওপর প্রভাব পড়ে। এসি একটি বিলাসপণ্য। এসি কিনতে যাওয়া আগে কোন ব্র্যান্ডের দাম কেমন তা জেনে গেলে ভাল হয়।
তীব্র গরমে এসি বিক্রির হিড়িক চলে। ইনভার্টার টেকনোলোজি সমৃদ্ধ এসির চাহিদা বেশি। এসি কেনার আগে এসি কত টনের-জেনে নিবেন এবং এতে ইনভার্টার আছে কিনা নিশ্চিত হবেন।
বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এসি’র দাম বিভিন্ন রকম। Mathias Reding |
কোন ব্র্যান্ডের এসির দাম কত?
ওয়ার্লপুল এসি
ওয়ার্লপুল এসির কয়েকটি মডেল রয়েছে সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়। ওয়ার্লপুল বাংলাদেশ এর এসিগুলোর দাম-
ওয়ার্লপুল এর ইনভার্টার ১ টনের এসির দাম ৭৫ হাজার টাকা।
ওয়ার্লপুল এর দেড় টনের এসির দাম ৯৫ হাজার টাকা।
আরো পড়ুন: মোবাইল ফোনের আইএমইআই নাম্বার কীভাবে জানবেন?
হিটাচি এসি
হিটাচি এসিগুলো গরমে আরাম দেয় কিন্তু দাম আছে বেশ।
হিটাচি’র দেড় টনের ইনভার্টার এসির দাম ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা।
হিটাচি’র দুই টনের দাম ১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা।
জেনারেল এসি
বাংলাদেশে জেনারেল এসিগুলোর জনপ্রিয়তা রয়েছে।
জেনারেল ইনভার্টার ১ টন এসির দাম ৮১ হাজার টাকা।
জেনারেল দেড় টন এসির দাম ১ লাখ ১৬ হাজার টাকা।
গ্রী এসি
গ্রী ব্র্যান্ডের এসির চাহিদা আছে ইলেক্ট্রনিক্স মার্কেটে।
গ্রী ইনভার্টার ১ টন এসি’র মূল্য ৫৯ হাজার টাকা।
গ্রী দেড় টন এসি’র মূল্য ৭৮ হাজার টাকা।
আরো পড়ুন: রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখব?
ট্রান্সটেক ব্র্যান্ডের এসি
ট্রান্সটেক ব্র্যান্ডের এসি কিনলে নানা রকম হিসেব করে কিনবেন
ট্রান্সটেক ইনভার্টার ১ টন এসির প্রাইস ৬০ হাজার টাকা।
ট্রান্সটেক দেড় টন এসির প্রাইস ৮০ হাজার টাকা
ট্রান্সটেক দুই টনের এসির প্রাইস ৯৩ হাজার টাকা।
আরো পড়ুন: ড্রপ শিপিং করে যেভাবে ইন্টারনেটে টাকা আয় করবেন।
মিনিস্টার এসি
এসি অদল–বদলের সুবিধা দিয়েছে মিনিস্টার। এখনও দিচ্ছে কিনা জেনে নিবেন।
মিনিস্টার ১.৫ টন ইনভার্টার এসি ৭৩ হাজার টাকা
মিনিস্টার ২ টন ইনভার্টার এসি ৮১ হাজার টাকা।
যমুনা ব্র্যান্ডের এসি
যমুনা ইলেক্ট্রনিকস দেশি ব্র্যান্ড, দাম কম তবে মাল মন্দ নয়। যমুনা ব্র্যান্ডের এসির দাম শুরু হয় ৪৫ হাজার টাকা থেকে।
যমুনা ১ টন এসি ৪৫ হাজার টাকা,
যমুনা ২ টন এসির দাম ৭৮ হাজার টাকা,
যমুনা দেড় টন এসি ৬৫ হাজার টাকা।
ওয়ালটন এসি’র দাম
বাংলাদেশের বাজারের একটি বড় অংশ দখল করে রেখেছে ওয়ালটন।
ওয়ালটন ইনভার্টার ১ টন এসি’র প্রাইস ৬৩ হাজার টাকা
ওয়ালটন দেড় টন এসি ৭২ হাজার টাকা,
ওয়ালটন নন ইনভার্টার ১ টন এসির মূল্য ৪৭ হাজার টাকা।
ভিশন এসি
ভিশন এসি বেশ সস্তা। ভিশন ইলেক্ট্রনিক্স দেশি পণ্য দেয়।
ভিশন ১ টন এসি ৪০ হাজার টাকা,
ভিশন দেড় টন এসি ৫৯ হাজার ৩১০ টাকা,
ভিশন ২ টন এসির দাম ৭৩ হাজার ৭১০ টাকা।
মিডিয়া এসি
মিডিয়া এসির দামও বেশি নয়। বলা যায় অনেক সস্তা এই ব্র্যান্ড এর এসি।
মিডিয়া ১ টন এসির দাম ৪৩ হাজার টাকা,
মিডিয়া দেড় টন এসির দাম ৫৯ হাজার টাকা,
মিডিয়া ২ টন এসির দাম মাত্র ৬৮ হাজার টাকা
স্যামসাং এসি মন্দ নয়
স্যামসাং ব্র্যান্ডের এসিতে নানা রকম সুবিধা থাকে। এটি কোরিয়ান ব্র্যান্ড। ট্রান্সকম ডিজিটাল এটি নিয়ে ফাইট করে দেশি ব্র্যান্ডের সাথে। স্যামসাং এসির দাম ভাল।
স্যামসাং ইনভার্টার ১ টন এসির দাম ৭৪ হাজার টাকা,
স্যামসাং দেড় টন এসি ৯৫ হাজার ৯০০ টাকা
এবং স্যামসাং দুই টনের এসি মিলবে ১ লাখ ৮ হাজার টাকায়।
এসি তে টন বলতে কী বুঝায়?
এক টন থেকে চার টনের এসি কিনতে পাওয়া যায় বাজারে । এখানে টন বলতে এসির ওজন বুঝায় না। তাহলে কী বুঝায়? মূলত একটি এসি ঘণ্টায় কি পরিমাণ গরম হাওয়া ঘরের বাইরে পাঠাতে পারে তার সক্ষমতা বোঝায় টন দিয়ে।
যেমন ১ টন এসি এর মানে হলো- এই এসি’র বাতাস ঠাণ্ডা করার ক্ষমতা ১ টন। ছোট ঘরের জন্য একটি ১ টনের এসি যথেষ্ট। কিন্তু বড় ঘর হলে দেড় টন বা ২ টন এসি লাগে। আরো বড় ঘরে একাধিক এসি লাগে।
ইনভার্টার/নন ইনভার্টার এসি
ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের মূল চিন্তার বিষয় হল এর বিদ্যুৎ বিল। এসি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তাই।
একটি ইনভার্টার সমৃদ্ধ এসি বিদ্যুৎ খরচ কম করে। বিপরীতে নন ইনভার্টার এসি বিদ্যুৎ খরচ বাড়ায়। এই কারণে ইনভার্টার যুক্ত এসির চাহিদা বেশি। চাহিদার কারণে দামও বেশি।
আপনিও চেষ্টা করুন এমন একটি এসি কিনতে যাতে ইনভার্টার থাকবে।
কনডেনসার ও কমপ্রেসর দেখে এসি কিনুন
কনডেনসার ও কমপ্রেসর অ্যালুমিনিয়ামে তৈরি নাকি কপারে তৈরি সেটি বিবেচনা করে এসি কিনতে হয়। সাধারণত ১০০% কপার কনডেনসার ও ১০০% কপার কম্প্রেসরযুক্ত এসি বেশ টেকসই হয়। এসির মান অনেকটাই নির্ভর করে এর ওপর।
কপার নিরাপদ। বিদ্যুৎ খরচ কম হয় কপারের এসিতে। কারণ কপারের পরিবহন ক্ষমতা বেশি। কপার শক্তিশালী ধাতু হওয়ায় সহজে নষ্ট হয় না, এটি অধিক চাপ সামলে নেয়। ফলে কোন লিকেজ হলে সারানো যায়। যেখানে অ্যালুমিনিয়াম কনডেনসারে এর কোন সুবিধা নেই।
এসির দক্ষতা বেশি থাকে মোটা ব্যাসের সাধারণ টিউবের থেকে কম ব্যাসের বা চার থেকে সাত মিলিমিটার ফিনযুক্ত কনডেনসারের ।
আরো পড়ুন: ই-সিম ব্যবহারযোগ্য হ্যান্ডসেট মডেলগুলো।
এসির দাম সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা পেলেন এই পোস্টের মাধ্যমে। এখানে এসির দামের মোটামুটি রাউন্ড ফিগার দেওয়া হয়েছে। সামান্য কমতে বা বাড়তে পারে। ডলারের মাধ্যমে এসব পণ্য আমদানি করা হয়; বিধায়-দাম কমতে পারে বা বেশি হয়ে যেতে পারে।
গ্রীষ্মের উত্তাপ হ্রাস করতে এসি কিনতে পারেন। তবে কিছু গাছ লাগান। ওপরে দেওয়া ব্র্যান্ডের আরও বিভিন্ন দামের এসি রয়েছে। এসি কিনতে গেলে অবশ্যই চেষ্টা করবেন ইনভার্টারসহ কিনতে। যেহেতু এই ইনভার্টার এসিতে বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করে।