ওজন নিয়ে কত কী যে চলে আমাদের দেশে! ওজন একটু বাড়লে কেউ বলে ওজন কম রাখো। আবার ওজন কম হলে বলে ওজন বাড়াও। যাব টা কোথায়? মাঝামাঝি ওজনের শরীর ভাল। যাদের শরীর বেশি চিকন বা পাতলা। তারা ওজন বাড়াতে পারেন। ওজন বাড়াতে কী করবেন জানুন।
শারীরিক ব্যয়ামের পাশাপাশি সঠিক পন্থায় ফ্যাটযুক্ত খাবার খেয়ে নিয়মের চেয়ে ওজন বাড়িয়ে ফেলা যায়। এক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করেও লাভ নেই। বেশি ফ্যাট গ্রহণ করে মোটা হওয়া মোটেও ভাল নয়। ওষুধ খেয়ে ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করা উচিত নয়। ডাক্তারগণ বলেন, ওজন বাড়াতে খাবার গ্রহণ-ই উত্তম উপায়। সারা দিন এটা সেটা কাজ করে যত ক্যালরি ঝরবে, এর চেয়ে ৩০০-৫০০ ক্যালরি বেশি গ্রহণ মোটা হতে সাহায্য করবে। ওজন বাড়ারোর জন্য ক্যালরিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ ছাড়াও শর্করার বৃদ্ধি, প্রোটিনযুক্ত খাবার গ্রহণ, দই ও দুধ খাওয়া, বারবার অল্প অল্প করে খাওয়া ইত্যাদি নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।
একটু মোটা হবার জন্য ৫ ধরণের খাদ্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। চলুন জেনে নেই কোন ধরনের খাবার সেগুলো।
Image: Darwin Laganzon, Pixabay |
সামান্য বেশি ক্যালরি
খাদ্য তালিকায় নিয়মিত কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, চিনাবাদাম, খেজুর, কিসমিস, আলুবখরা, পনির, ক্রিম, মুরগির মাংস, আলু, মিষ্টি আলু, চকলেট, কলা, আ্যভোকাডো, আখরোট, পেস্তা, পিনাট বাটার ইত্যাদি ক্যালরিযুক্ত খাদ্য রাখলে একটু মুটিয়ে যাওয়া সহজ হবে।
শর্করা বাড়ানো
মোট ক্যালরির শতকরা ৫০-৬০ ভাগ শর্করা রাখুন। দিনে তিনবার প্রধান খাবার হিসেবে শর্করা গ্রহণ করা ভাল উপকারী। পাস্তা, আলু, আটা, চাল এ তালিকায় রাখতে পারেন। এসব খাবার কম নয় বরং আপনার ওজন বাড়াতে একটু বেশি করে খেতে হবে।
বেশি প্রোটিন
কমিয়ে আনুন ফ্যাট জাতীয় খাদ্য। বরং বাড়াতে হবে প্রোটিন গ্রহণ। প্রোটিন পেশির ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। এতে পেশি মজবুত হবে এবং প্রোটিন নিলে কর্মদক্ষতা বাড়বে আপনার। ফ্যাটজাতীয় খাবার অল্প হলে ঠিক আছে। এসব বেশি খেলে শরীরে মেদ জমবে। মেদ শরীরের জন্য ভাল নয়।
আরো পড়ুন: ডাবের পানির উপকারিতা।
ওজন বাড়াতে দই ও দুধ খাওয়া
দুধ খুবই উপকারী স্বাভাবিক পদ্ধতিতে ওজন করতে চাইলে । তবে যারা দুধ খেতে পারেন না, বমি হয়। তারা সকালে দইয়ের সঙ্গে কলা মিশিয়ে খেতে পারেন।দুধের কাজ হয়ে যাবে। প্রতি দিন খাবারের তালিকায় অবশ্যই দুধ রাখুন।
বারবার খান
একসঙ্গে অনেক খাবার খাওয়া উচিত নয়। একসঙ্গে অনেক খাবার খাওয়ার পরিবর্তে অল্প অল্প করে বেশিবার খান। ওজন বাড়াতে চাইলে খাবার সঠিকভাবে হজম হওয়া দরকার। বার বার অল্প করে খাবার গ্রহণ হজম সঠিকভাবে করতে সাহায্য করে।
ওজন বাড়ানোর জন্য স্বাস্থ্যকর সকালের নাস্তা
সকালের নাস্তায় ওজন বাড়াতে কী খাবেন? বার্লি, গম, কুইনো, ইত্যাদি খান লাল অংশসহ। মানে এসবের গোটা শস্য অন্তর্ভুক্ত করুন খাবারে৷ মটরশুটি, ডিম, মাশরুম, মুরগির মাংস, টুনা, ইত্যাদি প্রোটিনযুক্ত খাবার খেতে পারেন৷ বাদাম, বাদাম বিস্কুট, বাদাম বার খান। আর ফুল ক্রিম দুধ, কলা, আম, এবং খেজুর খাওয়া শুরু করুন সকালের নাস্তায়৷
কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে?
ওজন বাড়ানোর জন্য কি ভিটামিন খেতে হয়? শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে সবথেকে বেশি ভূমিকা ভিটামিন B এর। এটি পাওয়া যায় বিভিন্ন খাবারে। ভিটামিন যদি সাপ্লিমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করা হয় তাহলেও হবে। ভিটামিন B কমপ্লেক্স এর মধ্যে ভিটামিন B১ বা থায়ামিন, B৯, B১২ বেশি কার্যকর।
আরো পড়ুন: ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম।
দ্রুত ওজন বাড়ে কী খেলে?
শুকনো ফলমূল খেলে শরীরের ওজন দ্রুত বাড়ে। ড্রাই ফ্রুটস ওজন বাড়ানোর জন্য আদর্শ টেকনিক। রোদে শুকানো কাজুবাদাম, কিশমিশ, খেজুর বা আমণ্ড খেলে শরীরে ক্যালরি গ্রহণ বেশি হবে। ফলে দ্রুত ওজন বাড়বে। দ্রুত ওজন বাড়াতে নিয়মিত সকালে নাশতার সময় ১০-১২টি আমণ্ড বা কাজু, কিশমিশ বা খেজুর খাওয়া বেশ দারুন রুটিন। আলু, সাগুদানা, কলা, কবুতরের মাংস দ্রুত ওজন বাড়ানোর জন্য কার্যকরী।
ওজন বাড়াতে কী করবেন সে বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেছি ওপরে। আমরা ৫টি খাদ্যগ্রহণ নিয়ম দেখিয়েছি যা একজন ব্যক্তির ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। ওজন বেশি করা কিন্তু ভাল নয়। এই ওজন বৃদ্ধি বিষয়ক পরামর্শ কেবল তাদেরই জন্য-যারা খুব সামান্য ওজনের অধিকারী এবং খুব অল্প ওজনের জন্য যাদের সমস্যা হচ্ছে।