গ্রিন টি এমন এক ধরণের চা যা ক্যান্সারসহ নানান রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। আজকাল তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় এই চা। এই চা শরীরের জন্য বেশ উপকারী। যদিও অনেকে দুধ চায়ের মজা ছাড়তে চায় না। অনেকেই জানেন না কীভাবে গ্রিন টি তৈরি হয়। গ্রিন টি সত্যিই গ্রিন কিনা সেটা নিয়েও কৌতুহল রয়েছে নতুনদের মাঝে।
গ্রিন টি সবুজ বা গ্রিন হয়। যদিও অন্য কালার হওয়াও অসম্ভব নয়। সে যাই হোক- গ্রিন টি তৈরির নিয়ম কী? প্রথমে একটি ন্যাচারাল গ্রিন টি এর ব্যাগ নিয়ে তা কেটে ফেলুন। ব্যাগের ভেতরের গুড়ো সবুজ চা অথবা কাঠিগুলো গরম জলে ডুবিয়ে দিন। কয়েক সেকেন্ড রাখলে জলের রং হালকা সবুজ হবে। এভাবে গ্রিন টি তৈরি হয়ে যাবে। তবে চায়ের স্বাদ মিষ্টি করার জন্য সাথে একটু মধু দিতে পারেন ।
গ্রিন টি তৈরির নিয়ম কী?
গ্রিন টি তৈরির জন্য আমরা একটি ফর্মুলা প্রয়োগ করি। পরিষ্কার পানি, গ্রিন টি ব্যাগ, মসলা ইত্যাদি মিশিয়ে গ্রিন টি তৈরি করা যায়। আমরা গ্রিন টিকে ৩ টি ভিন্ন স্বাদে ও ফ্লেভারে তৈরি করতে পারি। একটি হলো- সাধারণ গ্রিন টি। দ্বিতীয়টি-লেবুর সুগন্ধিযুক্ত গ্রিন টি, এবং সর্বশেষ-মসলাযুক্ত গ্রিন টি।
১. সাধারণ গ্রিন টি তৈরি
১ কাপ পানি গরম করুন। দেড় কাপ নিতে হবে। কারণ কিছু জল চুলায় দেয়ার পর বাষ্প হয়ে চলে যাবে।
পানিতে গ্রিন টি ব্যাগ খুলে সবুজ পাতা গুড়ো ঢালুন। ১ মিনিটের কম সময় চুলায় রেখে উঠিয়ে ফেলুন।
ছেঁকে নিয়ে শুধু পানিটা পান করুন।
এর সঙ্গে একটু মধু মেশাতে পারেন। মধু না মেশালেও চলবে।
২. টক স্বাদের গ্রিন টি তৈরি
১ কাপ পানি গরম করুন। এখানেও দেড় কাপ নিতে হবে। কারণ কিছু জল চুলায় দেয়ার পর বাষ্প হয়ে উড়ে চলে যাবে।
পানি গরম হলে গ্রিন টি ব্যাগ খুলে সবুজ চা গুড়ো ঢালুন। ১ মিনিটের কম সময় চুলায় রেখে উঠিয়ে ফেলুন।
ছেঁকে নিয়ে লেবুর টুকরো দিন
পুঁদিনা পাতা দিন
এবার শুধু পানিটা পান করুন।
এর সঙ্গে একটু মধু মেশাতে পারেন। মধু না মেশালেও চলবে কিন্তু স্বাদ সুবিধের হবে না। কারণ লেবু ও পুঁদিনা পাতা রয়েছে।
৩. মসলাযুক্ত গ্রিন টি তৈরি
১ কাপ পানি গরম করুন। এবারও বলব দেড় কাপ পানি নিতে। যেহেতু কিছু জল চুলায় দেয়ার পর বাষ্প হয়ে যায়।
গরম জলে গ্রিন টি ব্যাগ খুলে সবুজ রঙের গ্রিন টি গুড়ো ঢালুন। ১ মিনিটের কম সময় চুলায় রেখে আগুন জ্বলা বন্ধ করুন।
ছেঁকে নিয়ে শুধু পানিটা পান করুন।
এর সঙ্গে একটু মধু মেশাতে পারেন। মসলাও মেশাতে পারেন।
কী কী মসলা কতটুকু নেবেন দেখুন-
মসলা | পরিমাণ |
আদা | |
লবঙ্গ | |
দারচিনি | |
এলাচ |
মসলাগুলো গুড়ো করে নিয়ে মেশাবেন চায়ের সাথে। আপনি গুড়ো না করেও চা খেতে পারেন কিন্তু খুব একটা ভাল স্বাদ পাবেন না।
পড়ুন: নতুন স্বাদের গোলাপের খাস পোলাও
গ্রিন টিতে কী কী উপাদান থাকে?
বায়ো একটিভ কমপাউন্ড
এন্টি অক্সিডেন্ট
মিনারেল
এমাইনো এসিড
ইত্যাদি
গ্রিন টি কি সত্যিই গ্রিন? গ্রিন টি খাওয়ার উপকারিতা
গ্রিন টির অনেক গুলো উপকারিতার কথা প্রচলিত রয়েছে। যেমন এটি রোগ প্রতিরোধ করে। মন চাঙ্গা রাখে। কর্মক্ষমতাকে একটিভ রাখে। ইত্যাদি
ব্যস্ততা থেকে অবসাদ আসে, মানসিক অস্থিরতা হয়-তখন গ্রিন টি শরীর ও মনকে চাঙ্গা করে।
গ্রিন টি নিয়মিত পান করলে বাড়তি ওজন কমে।
গ্রিন টি শরীরের মেটাবলিজমের রেট বাড়ায়।
ত্বকের সজীবতার জন্য গ্রিন টি উপকারি।
ক্যান্সার প্রতিরোধ কতরতে পারে গ্রিন টি। প্রায় ২২ শতাংশ ব্রেস্ট ক্যান্সার ঝুঁকি কমায়।
কোলন ক্যান্সারও প্রতিরোধ করে। এই চা খেলে ক্যান্সার হবেই না এমন কথা ডাক্তাররা বলেন না। তবে ঝুঁকি অনেকটাই কমে বলে তারা দাবি করেন।
ভুলে যাওয়ার রোগ যেমন আলজেইমার, পারকিনসন্স প্রতিহত করতে পারে। বার্ধক্যের এসব রোগ ছাড়াও দাঁতকেও ভাল রাখে গ্রিন টি। মুখের দুর্গন্ধ কমাতে পারে। মাড়িতে প্রবলেম থাকলে কমে যায়।
ডায়াবেটিস থাকলে কমে গ্রিন টি এর ম্যাজিকে। বলণা হয়-টাইপ টু ডায়াবেটিক রোগীর জটিলতা অনেকটাই কমে গ্রিন টি খেলে। এছাড়া আরো কিছু উপকারের মধ্যে কার্ডিওভাস্কুলার জনিত রোগ কমায়। হার্ট ভাল থাকে। ফুসফুস ভাল থাকে। গলা পরিষ্কার হয়।
গ্রিন টি পানে সতর্কতা
গ্রিন টি কি দামী হয়?
সাধারণ চায়ের তুলনায় গ্রিন টি এর দাম বেশি রাখে ব্র্যান্ডগুলো। তবে এই দাম এত বেশি নয় যে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।