মজার বিষয় হলো বেশিরভাগ ঘড়ি ব্যবহারকারীই জানেন না যে কেন তারা বামহাতে ঘড়ি পরিধান করেন।
Image: Martin Péchy, Pexels |
ঘড়ি পরেন বুঝি? আমাদের ধারণা বাঁহাতেই পরেন! কারণ পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার সিংহভাগই বাঁহাতে ঘড়ি নেয়।
এক সমীক্ষায় এমন তথ্য জানা গেছে। ঘড়ি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বেশিরভাগই জাবাব দিয়েছিল, বাকি অনেককে দেখেন, তাই তারাও নাকি কিছু না ভেবেই তাদের অনুসরণ করে বাঁহাতে ঘড়ি পরা শুরু করেছেন।
কেন বেশিরভাগ মানুষ বাঁহাতে ঘড়ি পরে থাকেন তার উত্তর খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে জীবনধারাবিষয়ক এক সাময়িকী।
হাতঘড়ি বিষয়ক সহজ ইতিহাস
একদল গবেষকের মনে হয়েছিল, শরীরের গঠনকে যদি গুরুত্ব দেওয়া হয়, তাহলে ছেলেদের নাকি হাতের শক্তির বিবেচনায় ডান হাতে এবং মেয়েদের বাঁ-হাতে ঘড়ি পরা উচিত। কিন্তু তারপরও এই নিয়মটা কেউ আমলে নেয় না কেন?
ইতিহাস থেকে জানা যায় - যখন ছোট ঘড়ির বাজারে এসেছিল, তখন বেশিরভাগ ব্যবহারকারীই ই তা পকেটে রাখতেন। এ জন্য পকেট ঘড়ির চল সে সময় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। কবজিতেও যে ঘড়ি পরা যেতে পারে, সেটি ওই সময় কারো মাথায় আসে নি।
বোর যুদ্ধের সময় একদল সৈনিক প্রথমে চামড়ার স্ট্র্যাপে ঘড়ি আটকে কবজিতে পরা শুরু করে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল মিলিটারি অপারেশনের প্রতি মিনিটকে নথিবদ্ধ করা। আর এমনটা করতে গেলে বারে বারে পকেট থেকে ঘড়ি বের করা ছিল খুব ঝামেলার বিষয়।
আর এ জন্যই সে সময় থেকে শুরু হয়েছিল কবজিতে ঘড়ি পরা এবং চামড়ার বেল্টে। তবে তখনও তা সাধারণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে সেভাবে জনপ্রিয় হয় নি।
আরো পড়ুন: মুলা শাক খেলে কী হয়?
কিন্তু ঘড়ি বাঁ-হাতে কেন?
হাত ঘড়ির সূচনা থেকেই বাঁহাতে ঘড়ি পরা শুরু হয়েছিল। কারণ ছিল একটাই। আসলে সে সময়কার হাত ঘড়ি ছিল খুব বড় এবং হাত থেকে পড়লে ভেঙ্গে যেত সহজে। তাই যাতে কোথাও ঠোকা লেগে ঘড়িটা ভেঙে না যায়, তা সুনিশ্চিত করতেই বাঁহাতে ঘড়ি পরা শুরু হয়েছিল।
কাজ করতে গেলে ডান হাত যতটা কাজে লাগে, ততটা কিন্তু বাঁহাত কাজে আসে না। তাই যদি বাঁহাতে ঘড়ি পরা হয়, তাহলে ভাঙার ঝুঁকি কম। তাই তখন থেকেই বাম হাতে ঘড়ির চল শুরু। তারপর থেকে যত দিন গড়িয়েছে বাঁহাতের ঘড়ি পরার চল জনপ্রিয়তা পেয়ে গেছে।
বিজ্ঞানীরাও বামহাতে ঘড়ি পরা গবেষণা করেছেন?
বাঁহাতে ঘড়ি পরার কারণ সম্পর্কে ধরণা করার চেয়ে বৈজ্ঞানিক গবেণার মূল্য বেশি। স্পষ্ট উত্তর পাওয়া সম্ভব বিজ্ঞানের কাছ থেকেই। তাদের ধারণা- সিংহভাগ মানুষই ডান হাতে কাজ করতে বেশি শক্তি পায়। ফলে সময় দেখার দরকার হলে ডান হাত উঠালে কাজ বন্ধ হয়ে যাবে।
এ রকম কাজে ব্যঘাতের কারণেও বাম হাতে ঘড়ি পরা হয় যে সহজে ঘড়ি দেখা যায়।
যদিও ঘড়ি এখন স্মার্ট হয়েছে, এটি এখনও বামহাতেই রয়ে গেছে।