কাশ্মির ইস্যুতেও আরব দেশগুলো টু শব্দ করেনি, এবার নবীকে আক্রমণ করার পর তারা ভারতকে চাপ দিয়ে বিজেপির অপরাজনীতে বেশ বড় একটা ঝাঁকি দিয়েছে। এই ঝাঁকি তাদের ওপর কতটা স্থায়ী প্রভাব রাখবে সেটা দেখার বিষয়।
‘এমন ভাবার কোনো কারণ নেই যে মুসলিম দেশগুলো বোকা-গাধা ... একটি স্ফুলিঙ্গের অপেক্ষা করছিল সবাই। কেউ যখন নবীকে আক্রমণ করবে, তখন তা একটি বা দুটি মুসলিম দেশ নয়, বরং এটি পুরো মুসলিম উম্মার ওপর আক্রমণ।’
মনে করা হচ্ছে, বিজেপির সদ্য বরখাস্ত মুখপাত্র নূপুর শর্মা সেই স্ফুলিঙ্গ আরবদের হাতে তুলে দিয়েছেন। মহানবীকে নিয়ে বিজেপির এই রাজনীতিকের কটূক্তি মুসলিম বিশ্বে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির একজন নেতা এবং দলের অন্যতম মুখপাত্র তিনি। এ খবর বেশ রটে গেছে এবার।
নূপুর শর্মার বিতর্কিত এক মন্তব্য নিয়ে সেদেশের মুসলমান এবং বিরোধীরা গত কয়েকদিন ধরে হৈচৈ করলেও সরকার তাতে বিন্দুমাত্র কান দেয়নি।
কাতার সরকার দোহাতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নিয়ে বিজেপি মুখপাত্রের বক্তব্য নিয়ে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলার পর নরেন্দ্র মোদির সরকার নড়েচড়ে বসে।
এরপর কুয়েত, বাহরাইন, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), সৌদি আরব থেকে শুরু করে এক ডজনেরও বেশি মুসলিম দেশ একে একে ক্ষোভ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। কারো কারো বিবৃতির ভাষা বেশ কড়া।
আরব বিশ্বে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে কুয়েতে দোকানপাটে ভারতীয় পণ্য বিক্রি বন্ধ করা হয়েছে।
মিশরের আল আজহারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কিছু কট্টর লোকজনের ভোটের জন্য ইসলামের অবমাননা উগ্রবাদের সমার্থক। এর ফলে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে পারস্পরিক ঘৃণা ও অবিশ্বাস জন্ম নেবে।’
ভারতের সাবেক কূটনীতিক কেসি সিং বলেন, এটি বছরের পর বছর ধরে বিজেপির মুসলিম ও ইসলাম বিদ্বেষী রাজনীতির পাল্টা প্রতিক্রিয়া।
সরকার খানিকটা ঝাঁকি খেয়েছে।
‘কথাবার্তা ও কার্যকলাপ দেখে মনে হচ্ছে বিজেপি ও ভারত সরকার কিছুটা হলেও উদ্বিগ্ন। গত আট বছরে যে বিজেপি কোনোরকম অনুশোচনা বা দুঃখ প্রকাশের ধার ধারেনি, তারাই নূপুর শর্মাকে সরিয়ে দিলো,’ বলেন ভারতীয় সাংবাদিক স্মিতা গুপ্তা।