‘খালেদা জিয়াকে টুস করে পদ্মা সেতুর নিচে ফেলে দেয়া উচিত’

Padma Bridge


বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রশ্ন তুলেছেন, পদ্মা সেতু এসব আওয়ামী লীগ নেতার পৈতৃক সম্পত্তি দিয়ে বানানো হয়েছে কি না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া বলেছিল, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে। সেতুতে যে স্প্যানগুলো বসাচ্ছে, এগুলো তার কাছে ছিল জোড়াতালি দেওয়া। বলেছিল, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, ওখানে চড়া যাবে না। চড়লে ভেঙে পড়বে। আবার তার সঙ্গে কিছু দোসরেরাও…তাদেরকে এখন কী করা উচিত? পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে টুস করে নদীতে ফেলে দেওয়া উচিত।’

গতকাল মঙ্গলবার ছিল আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৪২তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৮১ সালের ১৭ মে নির্বাসিত জীবন থেকে তিনি দেশে ফেরেন। তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আজ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপকমিটি। এতে গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রচার করেছে।

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. ইউনূস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁকে আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম গ্রামীণ ব্যাংকের উপদেষ্টা হতে। উপদেষ্টা হিসেবে থাকা আরও উচ্চ মানের। তার এমডিই থাকতে হবে। সেটা সে ছাড়বে না। কিন্তু তার বয়সে কুলায় না।’ বিষয়টি নিয়ে ইউনূস মামলা করেছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোর্ট আর যাই পারুক, তার বয়স তো ১০ বছর কমিয়ে দিতে পারবে না। কারণ, গ্রামীণ ব্যাংকের আইনে আছে ৬০ বছর পর্যন্ত এমডি পদে থাকতে পারবে। তখন তার বয়স ৭১ বছর। বয়সটা কমাবে কীভাবে? সে মামলায় হেরে যায়। কিন্তু প্রতিহিংসা নেয়।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা শুনেছি, সে (ইউনূস) আর মাহ্‌ফুজ আনাম আমেরিকায় যায়। স্টেট ডিপার্টমেন্টে যায়। হিলারি ক্লিনটনকে ই–মেইল করে। মি. জোয়েলিক সে সময় বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তাঁর শেষ কর্মদিবসে, কোনো বোর্ডসভায় নয়, পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দেন।’ বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের ফলে শাপেবর হয়েছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যে নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পারে, সেটা আজকে আমরা প্রমাণ করেছি। কিন্তু আমাদের এখানে একজন জ্ঞানী লোক বলে ফেললেন, পদ্মা সেতুতে যে রেললাইন হচ্ছে, তাতে ৪০ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে, তা তো ঋণ নিয়ে করা হচ্ছে। এ ঋণ কীভাবে শোধ হবে?’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, বড় বড় অর্থনীতিবিদ, ‘জ্ঞানী-গুণী এই ধরনের অর্বাচীনের মতো কথা বলেন কীভাবে? মেগা প্রজেক্টগুলো করে নাকি খুব ভুল করছি। তারা আয়েশে বসে থাকে আর আমার তৈরি করা সব টেলিভিশনে গিয়ে কথা বলে।’ 

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সমালোচনা হচ্ছে জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, এত টাকা দিয়ে স্যাটেলাইট করে কী হবে—এ প্রশ্নও কিন্তু তুলেছে তারা। অর্থাৎ বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু করলে তাদের গায়ে লাগে।

পদ্মা সেতু ঘিরে বিএনপি নেতাদের নিয়ে নানা মন্তব্য করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। এর জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রশ্ন তুলেছেন, পদ্মা সেতু এসব আওয়ামী লীগ নেতার পৈতৃক সম্পত্তি দিয়ে বানানো হয়েছে কি না। 

বুধবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পদ্মা সেতু নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল এ মন্তব্য করেন। 

পড়ুন: কানে ‘মুজিব’ ছবির ট্রেলার উদ্বোধন

আগামী মাসেই পদ্মা সেতু উদ্বোধনের প্রস্তুতি চলছে। এ নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেওয়া শুরু হয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form