নারী কপালে টিপ পরলে নারীকে দেখতে সুন্দর লাগে। এটা প্রায় সবাই স্বীকার করবেন। কিন্তু টিপ পরা নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে আজকাল। নারী কেন কপালে টিপ পরেন এবং কেন কিছু নারী টিপ পরেন না এসব এখন আলোচনার তুঙ্গে।
নারীর কপালে টিপ থাকলে সৌন্দর্য্য রর্ধন ছাড়াও আরো কিছু অর্থ বহন করে। সেগুলোই মূলত এসব তর্ক-বিতর্কের কারণ। চলুন আমরা জেনে নেই নারীর কপালের টিপ কী ইঙ্গিত বহন করে প্রচলিত ধারণায়।
ইঙ্গিত-১: কপালের টিপে নারী সুন্দর
কপালে টিপ পরলে নারীকে দেখতে আকর্ষণীয় লাগে। প্রিয় পুরুষ সঙ্গীকে আকর্ষণ করতে লাল টিপের গুরুত্ব আছে। বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জে ও শহরের রাস্তায় কিংবা বাড়ি বাড়ি ফেরি করে টিপ বিক্রি করা হয়। এসব ফেরি ওয়ালার নিকট থেকে সস্তায় টিপ কিনে পরতে শুরু করে ছোট ছোট মেয়েরা। সেখান থেকেই শুরু। তারা এর অন্য কোন অর্থ খুঁজতে যায় না। তারা জানে যে টিপ দেখতে সুন্দর, তাই টিপ কিনে পরেতে হবে।
ইঙ্গিত-২: কপালের টিপে নারীর বংশ পরিচয়
টিপ রীতি চালু হয়েছে প্রায় ৯৫০০ থেকে ১১৫০০ বছর আগে থেকে, বাল্মীকি যুগে। সেই সময় তৎকালীন হিন্দু সমাজে জাতিভেদ বা শ্রেণিভেদ প্রবল ছিল। ব্রাহ্মণরা উচ্চ শ্রেণির, তারা ঈশ্বরের অতি নিকটজন, পূত-পবিত্র। পবিত্রতার প্রতীক হিসাবে তারা কপালে সাদা চন্দন তিলক দিতেন। এখনও ব্রাহ্মণরা সাদা তিলক পরেন।
ক্ষৈত্রিয় হলো যোদ্ধা শ্রেণি, তারা বীর হিসাবে গণ্য হিন্দু সমাজে। ক্ষিপ্ততা, হিংস্রতা ও সাহসের প্রতীক হিসাবে তারা কপালে লাল টিপ দিতো।
বৈশ্যয় শ্রেণির লোকজন হলো ব্যবসায়ী এরা কপালে হলুদ রঙের টিপ ব্যবহার করতো।
এবং সমাজের সবচেয়ে নিচু শ্রেণি হলো শূদ্ররা। তাদের জন্য বরাদ্দ ছিল কালো রঙের টিপ। তারা কপালে কালো টিপ ব্যবহার করতে বাধ্য ছিল। হয়তেএখনও তাই।
ইঙ্গিত-৩: কপালের টিপে নারীকে ‘বেশ্যা’ মনে করা হয়
একটি সম্পূরক ধারণা
অনেক মুসলিম নারী লাল, নীল, হলুদ, সাদা, সবুজ সব রঙ্গের টিপই পরেন। তবে হিন্দু নারীরা টিপ পরেন বংশ পরিচয় অনুসারে।
বিশ্লেষকদের মতে, ধর্মে টিপ পরায় বারণ নেই। তারপরও সাধারণ নারীরা বিতর্ক এড়াতে ও বিব্রত না হতে জনসমক্ষে টিপ পরা থেকে বিরত থাকেন। শুধু ঘরে পরেন।