কিছু উদ্যোগ দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে। দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে উদ্যোগগুলো বেশ জরুরি। সেগুলো নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মানুষ চায় উদ্যোগগুলো যেন সফল হয়। এর সুফল যেন সাধারণ মানুষ পায়।
বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগ —
১. আমার বাড়ি আমার খামার, আশ্রয়ণ,
২. ডিজিটাল বাংলাদেশ,
৩. শিক্ষা সহায়তা কার্যক্রম,
৪. নারীর ক্ষমতায়ন কার্যক্রমসমূহ,
৫. সবার জন্য বিদ্যুৎ,
৭. সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি,
৮. কমিউনিটি ক্লিনিক ও শিশু বিকাশ,
৯. বিনিয়োগ বিকাশ,
১০. পরিবেশ সুরক্ষা।
আমার বাড়ি আমার খামার, আশ্রয়ণ
প্রকল্পের নাম আমার বাড়ি আমার খামার। এই প্রকল্পের অধীনে অনেক কার্যক্রম ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের আওতায় সমিতি গঠন হয়েছে- ০১ লক্ষ টি, উপকারভোগী সদস্য পরিবার- ৫৭ লক্ষ, সদস্য সঞ্চয়- ২০৮৬ কোটি টাকা, সরকার প্রদত্ত বোনাস- ২০০০ কোটি টাকা, ঘূর্ণায়মান তহবিল- ৩২০০ কোটি টাকা, মোট ঋণ গ্রহণকারী উপকারভোগীর সংখ্যা- ৪৬ লক্ষ , মোট ঋণ বিতরণ- ১১ হাজার কোটি টাকা।
ডিজিটাল বাংলাদেশ
রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে জনগনের সেবার মান উন্নয়নের লক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) কর্তৃক জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অবকাঠামো উন্নয়ন (ইনফো-সরকার ৩য় পর্যায় প্রকল্প) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই প্রকল্প ইতোমধ্যে অনেক সাফল্য পেয়েছে। এর আওতায় মেধাবী কম্পিউটার বিজ্ঞানীরা নিজ নিজ প্রকল্পের জন্য পুরস্কার পাচ্ছেন।
শিক্ষা সহায়তা কার্যক্রম
শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী ১০টি বিশেষ প্রকল্পের অন্যতম উদ্যোগ 'শিক্ষা সহায়তা'। একটি জ্ঞানভিত্তিক সুষম সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের মূল চালিকাশক্তি হলো পরিকল্পিত ও সার্বজনীন শিক্ষা কাঠামো গড়ে তোলা। প্রধানমন্ত্রীর সার্বজনীন শিক্ষা পরিকাঠামো বানানোর প্রাতিষ্ঠানিক রূপ প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট।
নারীর ক্ষমতায়ন কার্যক্রমসমূহ
শিক্ষার মাধ্যমে নারীর সম্মান বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি, সাক্ষরতা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়ে আছে। নারী ক্ষমতায়ন নারীদের সমাজে বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে জীবন নির্ধারণমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণের অবকাশ দেয়। নারী ক্ষমতায়ন নারীর নিজস্ব মূল্যবোধকে বিকষিত করতে সাহায্য করে।
সবার জন্য বিদ্যুৎ
দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি তথা সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার বাড়াতে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের লক্ষ্য পূরণে উন্নয়ন সহযোগীরা আধুনিক প্রযুক্তি ও অর্থ সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির দুটি মূল দিকের মধ্যে একটি হলো সামাজিক বীমা ও অন্যটি সামাজিক সাহায্য ব্যবস্থা। বাংলাদেশে অসহায় দরিদ্র মানুষের জন্য দ্বিতীয়টি চালু থাকলেও প্রথমটি শুধু অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবীরা পেয়ে থাকেন। কোনো কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও বর্তমানে এর প্রচলন দেখা যায়। তবে তাতে একবারে দরিদ্র, অসহায় মানুষর জন্য কোনো সুখবর নেই। সামাজিক বীমার অধীনে নাগরিক অধিকার যেমন- বেকারভাতা, বার্ধক্যভাতা, দুর্ঘটনাভাতা, চিকিৎসাভাতা, বাসস্থানভাতা, ইত্যাদি অন্তভুক্ত হতে পারে। কারণ সামাজিক বীমার মধ্যে কোনো কিছুর প্রাপ্তি সাংবিধানিক অধিকার বর্তায়।
কমিউনিটি ক্লিনিক ও শিশু বিকাশ
তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে গর্ভকালীন, মাতৃত্বকালীন ও প্রসূতিদের সেবাসহ বিভিন্ন জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ও বিনামূল্যে ৩০ প্রকার ওষুধ দেয়া হচ্ছে, যা নিরাপদে সন্তান প্রসব, নবজাতকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বিনিয়োগ বিকাশ
দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে এই কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগের ফলে দেশে বিনিয়োগের খরা কাটবে বলেও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। ‘বিনিয়োগ বিকাশ’ বহির্বিশ্বে এমনভাবে ব্র্যান্ডিং করা হবে যাতে বিদেশীরা এদেশে বিনিয়োগ এগিয়ে আসেন। এছাড়া দেশী উদ্যোক্তাদেরও আস্থা ফিরিয়ে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হবে।
বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে ইতোমধ্যে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিনিয়োগের প্রধান বাধাগুলো কি তা চিহ্নিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এসব বাধা দূর করে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানো হবে। এ লক্ষ্যে জাতীয় শিল্পনীতিও বিনিয়োগবান্ধব করা হয়েছে।
পরিবেশ সুরক্ষা
দেশের পরিবেশের সুরক্ষায় সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ। এজন্য দেশের পরিবেশের উন্নয়নে সরকার সম্ভাব্য সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করবে। যেকোনো মূল্যেই দেশের পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
পড়ুন: নবী অবমাননার জেরে ভারতকে আরব বিশ্বের কড়া বার্তা।
জাতীয় পরিবেশ নীতি ২০১৮ এ পূর্বের নীতিমালার ১৫টি বিষয় ছাড়াও বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ, পাহাড়, প্রতিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ সংরক্ষণ এবং জীবনিরাপত্তা, প্রতিবেশবান্ধব পর্যটন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা প্রস্তুতি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবস্থাপনা, অন্যান্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক উন্নয়ন, টেকসই উৎপাদন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় পরিবেশ নীতিতে চিহ্নিত বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থাসমূহ তাদের স্ব-স্ব কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
তথ্য ও ছবি: সরকারি ওয়েবসাইট